আলিফ মাহমুদ কায়সার, কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ

বৈরী আবহাওয়ায় কুমিল্লা চান্দিনার কৃষকরা শুরু করেছেন ইরি-বোরো চাষ। প্রচন্ড শীত আর ঘনকুয়াশা উপেক্ষা করে এবার বোরো চাষে নেমেছেন তারা। সময়মতো সার-বীজ আর সেচ সরবরাহে বদলে যাচ্ছে ক্ষেতের দৃশ্যপট। মাঠে চাষাবাদে ব্যস্ত কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে বোরো চাষাবাদে ভালো ফলন হবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন কৃষক ও উপজেলা কৃষি অফিস। সম্প্রতি এ ব্যাপারে তথ্যানুসন্ধানে গেলে কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে এমন তথ্যই উঠে আসে।

কৃষকরা জানান, সনাতন পদ্ধতির চেয়ে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার লাভজনক। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে বোরো ধানের বীজতলাসহ বিভিন্ন চাষাবাদে শ্রম, সময় আর ব্যয় কম হয়। উৎপাদন হয় বেশি। এ জন্য আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহারে আগ্রহী কৃষকরা। এদিকে সারের চাহিদা মেটাতে কেঁচো দিয়ে ভার্মিং কম্পোস্ট সার তৈরির প্রদর্শনীসহ নানা বিষয় পরামর্শ পাচ্ছেন।

বিরুপ আবহাওয়া ও নানা প্রতিক‚লতা সত্ত্বেও এবার স্থানীয় কৃষকরা বেশি পরিমাণ জমিতে ধান লাগিয়েছেন।কুমিল্লা জেলার চান্দিনা উপজেলায় চলতি মৌসুমে ধানের আবাদ বৃদ্ধি করেছেন কৃষক। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়া সত্ত্বেও ধানের আবাদ বৃদ্ধির বিষয়টিকে কৃষকসহ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি মোকাবেলা করতেই ধানের আবাদ বৃদ্ধির দিকে জোর দিয়েছেন কৃষক। এবার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ২০ হাজার হেক্টর ছাড়িয়ে যাবে। সেচের জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সমস্যা এবং রোগ-বালাইয়ের আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও কৃষকরা ঝুঁকি নিয়ে ধান বুনেছেন বেশি দাম পাওয়ার আশায়।

চান্দিনা উপজেলার ১২ কিলোমিটার পশ্চিমে জামিরাপাড়া গ্রাম। ওই গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম। বাড়ির পাশের তার কৃষি জমি রয়েছে প্রায় দুই একর। এসব জমি বর্গা দিয়ে সাইফুল বিভিন্ন এলাকায় টাইলস মিস্ত্রীর কাজ করতেন। কিন্তু সাইফুল এখন নিজেই চাষাবাসে নেমে গেছেন।

তিনি জানান, অভাবের সংসারে চালসহ সব জিনিসের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় তিনি নিজেই এখন চাষাবাদ শুরু করেছেন। কারণ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষিতে উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। ফলে বর্গাদার বেশি ধান দিতে রাজি হয় না। বাধ্য হয়ে নিজেই আগ্রহ দেখিয়েছেন আবাদের প্রতি। এতে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলেও উৎপাদিত ধানের এখন মূল্য পাওয়া যায়। একই গ্রামের বাচ্চু মিয়ার পুত্র বিল্লাল বলেন, শুধু তাই নয়, গত দুই-তিন বছরে এলাকায় কৃষি বন্টকের সংখ্যা বেড়েছে বহুগুণ। কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা জানা গেছে, উপজেলার মধ্যে উৎপাদনের দিক থেকে মহিচাইল ইউনিয়ন সব ইউনিয়নের শীর্ষে। বরাবরই এখানকার কৃষি উৎপাদন ভালো।

প্রাপ্ত এক তথ্যে জানা গেছে, তিন বছর ধরেই ইউনিয়নে ধানের আবাদ বাড়িয়েছেন কৃষক। চান্দিনা উপজেলার কৃষি সুপারভাজার বজলুর রশিদ বলেন, কীটনাশক, ডিজেলসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের মূল্য দ্বিগুণ বেড়ে গেলেও কৃষক এখন ধানের ভালো মূল্য পাচ্ছেন। পাশাপাশি জীবনযাত্রার ব্যয়ও বেড়েছে বহুগুণ। ফলে কৃষক নিজেই এখন ধানের আবাদ বৃদ্ধিতে মনোযোগ দিয়েছেন। একারণে যেখানেই আবাদি জমি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে সেখানেই ঝুঁকে পড়েছেন কৃষক ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ সূত্রে জানা যায়, দ্রুতই বদলে যাচ্ছে কুমিল্লা জেলার কৃষির চিত্র। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ আর সার্বিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এতে চাষাবাদে সনাতন পদ্ধতি থেকে সরে ঝুঁকে পড়ছে আধুনিক পদ্ধতিতে। ফলে সাশ্রয় হচ্ছে সময় আর শ্রম। ফলন হচ্ছে বেশি। এতে আর্থিকভাবে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে কৃষকদের। কৃষকেরা এবার বোরো ধানের বীজতলা করেছে আধুনিক পদ্ধতিতে। আলোর ফাঁদ দিয়ে শনাক্ত করছেন ক্ষেতের পোকা-মাকড়। ব্যবহার হচ্ছে শেড পদ্ধতি। কৃষি অফিসের অতন্দ্র জরিপ কার্যক্রমের অাওতায় আনা হচ্ছে পিছিয়ে পড়া কৃষকদের। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক পর্যবেক্ষণ আর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাড়ছে উৎপাদনের মাত্রা। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকেরা বোরো চাষাবাদে বাম্পার ফলন পাবে আশা করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

একটি জাল ভোট…
২০২৩ হোক দেশের…
পদ্মা সেতুতে যান…
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন…
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে…
আজ দ্বিতীয় ধাপের…
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ…
অতি জরুরি’ ভিত্তিতে…
প্রায় ১৮ মাস…

যুক্তরাষ্ট্রের উপহার হিসেবে ফাইজারের…

করোনা থেকে সুস্থ এক…

করোনা সংক্রমণে বিশ্বে ১৫তম…

বিশ্বে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের…

চীনে করোনার প্রথম ভ্যাকসিনের…