ডেস্ক রিপোর্ট, রাউজান(চট্টগ্রাম) ,সকালের কন্ঠঃ

অবিভক্ত ভারতবর্ষে বৃটিশ শাসকদের বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে চট্টগ্রামে তিনদিন স্বাধীনতার পতাকা উড্ডীন করে রেখেছিলেন মাষ্টার’দা সূর্য সেন। পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তির স্বাদ গ্রহণের প্রথম কৌশল এই উপমহাদেশের মানুষের মননে পৌঁছে দেন এই বীর পুরুষ। দূর্ভাগ্যের বিষয়-বাঙালি জাতি এই সূর্য সন্তানকে মাঠে-ময়দানের সভা-সমাবেশে তেজোদীপ্ত বক্তব্যের আবর্তে স্মরণ করলেও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তেমনভাবে সম্মান জানাতে পারেনি। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, আসাম, দিল্লিসহ বিভিন্ন রাজ্যে মাষ্টার’দাকে নিয়ে নানা ধরনের সভা-সেমিনার, চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্রসহ বিভিন্ন কর্মকান্ড চোখে পড়ার মতো। অথচ আমরা তাকে নিয়ে অনেকটা উদাসীন। কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবাসের নামকরণ করেই যেন এই বীর পুরুষের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পালা বা দায় শেষ !

বাংলাদেশে স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় পর ১৯৯৬ সাল থেকে একমাত্র জন্মস্থান রাউজান উপজেলায় জননেতা এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি’র আন্তরিক উদ্যোগে পালিত হয়ে আসছে মাষ্টার’দা সূর্য সেনের স্মৃতিময় দিনের নানামুখী অনুষ্ঠান মালা।
গতকাল শনিবার সকালে রাউজানস্থ মাষ্টার’দা সূর্য সেন স্মৃতি পাঠাগারের সামনে স্থাপিত আবক্ষ মূর্তিতে ফুলের মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর আওয়ামীলীগ নেতা এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী এমপি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, “পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙতে বাঙালির মনোজগতে সাহসী চেতনার বীজ বপনে মাষ্টার’দা সূর্য সেনের ভূমিকা অবিস্মরণীয়। তাঁকে নিয়ে যতটা কাজ করা দরকার, তা আওয়ামীলীগের সরকার ছাড়া অতীতে ক্ষমতায় থাকা অন্য কোনো সরকার করেনি”। তিনি আরও বলেন, মাষ্টার’দা সূর্য সেন বাঙালি জাতির অহঙ্কারের প্রতীক, রাউজানবাসীর গর্বের ধন। আমরা মাষ্টার’দাকে সবসময় উচ্চ আসনে রাখবো।

প্রসঙ্গত: ২০১৮ সালে ১৬ জানুয়ারি ভারতের সাবেক মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি রাউজানে মাষ্টার’দার বসত ভিটা ও পাঠাগার পরিদর্শনে আসেন।

ব্রিটিশ শাসকের পরাধীনতা থেকে মুক্তির স্বাদ এনে দিতে অবিভক্ত ভারতে যিনি সবার আগে ব্রিটিশ কুলীনদের ভিত কাঁপিয়ে দিয়েছিলেন, তিনি আমাদের মাস্টার’দা সূর্য সেন। মাস্টার’দা তখন ফাঁসির আসামী। ব্রিটিশ শাসক মাস্টার’দাকে হন্যে হয়ে খুঁজতে থাকলে ১৯৩৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি চট্টগ্রামের পটিয়া থানাধীন গৈরলা গ্রামে আশ্রয় নেন। সহযোদ্ধা ব্রজেন সেন তাঁকে এখানে নিয়ে আসেন। এ সময় ইংরেজ সরকার তাঁর মাথার দাম ধার্য করে ১০ হাজার টাকা। গৈরলা গ্রামের বিশ্বাস বাড়ির গৃহবধূ ক্ষিরোদপ্রভা বিশ্বাসের ঘরে মাস্টার’দা বিপ্লবীদের নিয়ে আত্মগোপন করেন। ১৯৩৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি দিনের কোনো এক সময় ব্রজেন সেন কারো জন্য ঘর থেকে খাবার নিয়ে ক্ষিরোদপ্রভা বিশ্বাসের বাড়ি যাচ্ছিলেন। তা দেখে ছোট ভাই নেত্র সেনের কৌতুহল জন্মে। পরে সূর্য সেনের অবস্থান জেনে পুলিশে খবর দেয়। ক্যাপ্টেন ওয়ামসলী’র নেতৃত্বে একদল গুর্খা সৈন্যের সাথে তুমুল গোলাগুলির পরে মাস্টার’দাকে রাত ২টার দিকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ১৯৩৪ খ্রিষ্টাব্দের ১২ জানুয়ারিতে কালজয়ী এই বিপ্লবীকে ফাঁসি দেয়া হয়।

সেদিন একটি দোতলা মাটির ঘরে সেদিন বীর পুরুষ মাস্টার’দা সূর্য সেন বিপ্লবী কল্পনা দত্ত, মণি দত্ত, ব্রজেন সেন, সুশীল দাশগুপ্ত ও শান্তি চক্রবর্ত্তীসহ আত্মগোপনে ছিলেন। ওইদিন রাতে ক্ষিরোদপ্রভা বিশ্বাসের এখানকার বাড়িটিতেই সহযোদ্ধা ব্রজেন সেনসহ গ্রেফতার হন অগ্নিযুগের মহান বিপ্লবী মাস্টার’দা সূর্য সেন। এদিন সৈন্যের দল পুরো গ্রাম ঘিরে ফেলে। সৈন্যদের সাথে তুমুল গোলাগুলির এক পর্যায়ে মাস্টার’দা অন্য সহযোদ্ধাদের আগে পালানোর সুযোগ দিয়ে নিজে ব্রজেন সেনসহ ধরা পড়েন। অবশ্য লোভাতুর নেত্র সেনের পরিণতি হয়েছিল করুণ। আহার করার সময় এক বিপ্লবী দা দিয়ে মুন্ড কেটে নেত্র সেনকে হত্যা করে।

আরও পড়ুন

একটি জাল ভোট…
২০২৩ হোক দেশের…
পদ্মা সেতুতে যান…
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন…
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে…
জাতির উদ্দেশ্য ভাষন।
আজ দ্বিতীয় ধাপের…
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ…
অতি জরুরি’ ভিত্তিতে…

যুক্তরাষ্ট্রের উপহার হিসেবে ফাইজারের…

করোনা থেকে সুস্থ এক…

করোনা সংক্রমণে বিশ্বে ১৫তম…

বিশ্বে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের…

চীনে করোনার প্রথম ভ্যাকসিনের…