ডেস্ক রিপোর্ট , সকালের কন্ঠঃ

প্রয়াত নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের অসংখ্য নাটকে অভিনয় করেছেন সালেহ আহমেদ। ওইসব নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তাও অর্জন করেন তিনি। গুণী এই অভিনেতা দীর্ঘদিন ধরে ভালো নেই। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি গত দুইবছর বিছানায় শুয়ে কাটাচ্ছেন। সালেহ আহমেদের চিকিৎসায় ব্যয় হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। ২০১১ সালে স্ট্রোকের পর থেকে তার চিকিৎসার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছে এই অভিনেতা পরিবারের সদস্যা। তার জীবনের অর্জিত অর্থের প্রায় পুরোটা ব্যয় হয়েছে চিকিৎসায় পেছনে।

বাধ্য হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট সহায়তার আবেদন করেছিলেন সালেহ আহমেদের স্ত্রী মুসলিমা আহমেদ। অভিনেতা ও সাবেক সংস্কৃতি মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, অভিনেতা আহসানুল হক মিনু এবং শিল্পী সংঘের মাধ্যমে এই অভিনেতার স্ত্রী কয়েকমাস আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিকিৎসার খরচ বাবদ সহায়তার জন্য আবেদন করেছিলেন। গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাশে দাঁড়ালেন অভিনেতা সালেহ আহমেদের। তার চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ টাকা দিয়েছেন সঞ্চয়ী পত্র হিসেবে।

সেখান থেকে প্রতি মাসে ২৫ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে সালেহ আহমেদের চিকিৎসায়। আজ (রবিবার) দুপুরে সালেহ আহমেদের স্ত্রী মুসলিমা আহমেদ এসব তথ্য জানিয়েছেন সংবাদমাধ্যমকে। তিনি বলেন, প্রথমদিকে আমাদের সমস্যা ছিল না। কিন্তু সাতটা বছর ধরে চিকিৎসা চালাতে কম অর্থ খরচ হয়নি! অভিনেতা মিনু ভাই সালেহ আহমেদের কাজিন। তিনি কয়েকমাস আগে আমাকে বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে সহায়তার জন্য আবেদন করতে। পরে আসাদুজ্জামান নূর ভাই খুব হেল্প করেছেন। এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নিকট পৌঁছুতে সাহায্য করেছে শিল্পী সংঘ।
সালেহ আহমেদের স্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিলেও অল্প হয়ে যাবে। সালেহ আহমেদ নামে একজন মানুষ এদেশে অভিনয় করতেন, এটা তিনি জানতেন। জানার পরে তার চিকিৎসার খরচ দিয়েছেন। শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিয়েছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
বিশেষ এক সূত্রে জানা যায়,সালেহ আহমেদ ‘চলাফেরা তো দূরের কথা, তিনি ঠিকমতো উঠে বসে পারেন না এখন। তার ফুসফুস প্রদাহজনিত সমস্যাসহ বাত সমস্যাও রয়েছে। যেজন্য ঠিকমত হাঁটতে পারেন না। এছাড়া কিডনির সমস্যাও রয়েছে। স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারেন না। মুখ দিয়ে লালা বের হয়। বাইরের কোনো মানুষকে তিনি চিনতে পারেন না।’

কিন্তু এখন ওই অবস্থার অনেকটা উত্তরণ হয়েছে। সালেহ আহমেদ আগের চেয়ে এখন ভালো আছেন। তার স্ত্রী আজ জানালেন, একা একা চলতে না পারলেও কেউ সাহায্য করলে তিনি ধরে ধরে হাঁটতে পারেন। পরিচয় করিয়ে দিলে মানুষকে চিনতে পারেন।এখন সালেহ আহমেদের মূল সমস্যা হচ্ছে, তার খাদ্যনালীতে। তিনি কিছুই চিবিয়ে খেতে পারেন না। নল দিয়ে তার খাবার দেওয়া হচ্ছে। আগে শরীরে পটাসিয়ামের ঘাটতি থাকলেও এখন তা কমে গেছে।

এই অভিনেতার স্ত্রী বলেন, দেড় থেকে দুমাস পরপর রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় সালেহ আহমেদকে। প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা পাওয়ার পরেও উন্নত চিকিৎসার জন্য সালেহ আহমেদকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে কিনা জানতে চাইলে মুসলিমা আহমেদ বলেন, প্রায় ৫ বছর ধরে অ্যাপোলো হাসপাতালে তার চিকিৎসা নেওয়া হচ্ছে। সেখানে আত্মীয়স্বজন রয়েছে। তারা উন্নত চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। সেজন্য দেশের বাইরে নেওয়ার ইচ্ছে নেই। অ্যাপোলো হাসপাতালেই চিকিৎসা হবে।

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে সালেহ আহমেদের জন্ম। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরে চাকরির পাশাপাশি ময়মনসিংহে অমরাবতী নাটমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এই অভিনেতা। স্বাধীনতার আগে বিটিভিতে তিনি নিয়মিত অভিনয় করতেন। ১৯৯১ সালে অবসরে যাওয়ার পর হুমায়ূন আহমেদের নাটকে ও চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ধারাবাহিক ‘অয়োময়’ নাটক এবং ‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে তার দাপুটে পদচারণা শুরু হয়। এরপর অসংখ্য টিভি নাটক এবং চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি, পেয়েছেন স্বাধীনতা পদক।

আরও পড়ুন

একটি জাল ভোট…
২০২৩ হোক দেশের…
পদ্মা সেতুতে যান…
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন…
বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে…
জাতির উদ্দেশ্য ভাষন।
আজ দ্বিতীয় ধাপের…
আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ…
অতি জরুরি’ ভিত্তিতে…

যুক্তরাষ্ট্রের উপহার হিসেবে ফাইজারের…

করোনা থেকে সুস্থ এক…

করোনা সংক্রমণে বিশ্বে ১৫তম…

বিশ্বে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্তের…

চীনে করোনার প্রথম ভ্যাকসিনের…