–মইনুদ্দিন জামাল চিশতী, রাউজানঃ
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা নানা কারণে বরাবরই আলোচনায় আসে। এবার রাউজানে সৃষ্টি হল এক নজীর বিহীন দৃষ্টান্ত। স্থানীয় সাংসদ ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরীর জ্যেষ্ঠ সন্তান, তরুণ রাজনীতিবিদ ও সমাজসেবক ফারাজ করিম চৌধুরী বিভিন্ন সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে জোরালো ভূমিকা রেখে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন দিকে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন। এবার তরুণ এই রাজনীতিবিদের আহবানে সমগ্র রাউজানবাসী একত্রিত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে সৃষ্ট ভয়ংকর মরণব্যাধি করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে রক্ষায় সারা দেশে চলমান লকডাউন পরিস্থিতিতে যখন রাউজানের নিম্নবিত্ত মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়াচ্ছিল, তখন ফারাজ করিম চৌধুরীর ডাকে রাউজানের মানুষ একে অপরের পাশে দাঁড়িয়েছে।
জানা যায়, লকডাউন শুরু হওয়ার আগে থেকেই নিজের ফেসবুক টাইমলাইনে স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বিভিন্নভাবে রাউজানের মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন ফারাজ করিম চৌধুরী। পাশাপাশি রাউজানের বিত্তশালী সকলকে এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। তার ডাকে সারা দিয়ে রাউজানের অনেক ব্যবসায়ী ও প্রবাসীদের সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত রাউজানের ৪০ হাজার গরীব ও অসহায় মানুষের জন্য ২০০ টন চাউল, ১২০ টন আলু, ৪০ টন পেয়াজ, ৪০ হাজার লিটার সয়াবিন তেল, ৪০ টন লবণ, ৪০ টন ডাল ও ২০ হাজার পিস মাস্ক মজুদ করা হয়েছে। রাউজান উপজেলার ১ টি পৌরসভা ও ১৪ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় এসব সামগ্রী পর্যায়ক্রমে গরীব ও অসহায় মানুষের কাছে পৌছে দিচ্ছে ফারাজ করিম চৌধুরী কর্তৃক পরিচালিত সেন্ট্রাল বয়েজ অব রাউজান এর হেল্প ডেস্ক টিম। ধারনা করা হচ্ছে এসব পণ্যসামগ্রীর মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। যা বাংলাদেশের কোন ১ টি উপজেলায় একজন ব্যক্তির প্রয়াসে সর্বোচ্চ রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে।
ফারাজ করিম চৌধুরীর ডাকে রাউজানের স্বনামধন্য অনেক ব্যবসায়ী এগিয়ে আসার পাশাপাশি মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেকেই গরীব ও অসহায় মানুষকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছেন। এমনকি একজন কৃষক তার ক্ষেত থেকে টমেটো প্রদান করার কথা জানান ও একজন ছাত্র তার টিউশনের টাকা জমিয়ে ৫০০ টাকা প্রদান করেন। একইভাবে একজন বাড়ীর মালিক তার ভাড়াটিয়াদের জন্য ১ মাসের বাসা ভাড়া মওকুফ করে দেন।
এই পুরো কার্যক্রমের সমন্বয়ক ও স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক লিমিটেড এর (ইসি) চেয়ারম্যান এস.এ.এম হোসাইন বলেন, রাউজানের সাংসদ ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ.বি.এম ফজলে করিম চৌধুরী দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে রাউজানবাসীর জন্য নিবেদিতপ্রাণ একজন ব্যক্তি হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। রাউজানবাসীর যে কোন দুর্দিনে তিনি সবার আগে ছুটে এসেছেন। এরই ধারাবাহিকতায় তার সন্তান ফারাজ করিম চৌধুরী বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে রাউজানের খেটে খাওয়া গরীব মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি সকলকে সহযোগিতা করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছেন। যার কারণে আমরা এতো ব্যাপক কার্যক্রম করতে পারছি।
রাউজান উপজেলা নির্বাহী অফিসার জোনায়েদ কবির সোহাগ বলেন, আগে থেকেই ফারাজ করিম চৌধুরীর কর্মকাণ্ড প্রশংসার দাবী রাখে। তিনি রাউজানের যে কোন সামাজিক অন্যায় ও মাদকাসক্তির প্রতিরোধে ভূমিকা রেখে আসছিলেন। দেশের এই কঠিন মুহুর্তে তিনি রাউজানের গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। তার আহবানে সাড়া দিয়ে পুরো রাউজানে ব্যাপক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রাউজানের ব্যবসায়ী সহ বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ তার ডাকে সাড়া দিয়ে সহযোগিতা করতে এগিয়ে এসেছেন।