আলিফ মাহমুদ কায়সার, কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা চান্দিনার দোল্লাই নোয়াবপুর সরকারি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্রী নুজহাত তাবাচ্ছুম তামান্না আক্তার(১৯) এর হত্যা মামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে দোল্লাই নোয়াবপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা।মঙ্গলবার(২৯ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার দোল্লাই নোয়াবপুর সরকারি কলেজ প্রাঙ্গন থেকে প্রতিবাদ স্বরুপ শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
মিছিলটি মাধাইয়া-রহিমানগর প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কলেজ গেইট প্রাঙ্গনে গিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেয়। এ সময় ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন,দোল্লাই নোয়াবপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আ.মান্নান, অধ্যাপক দ্বীপক কুমার মজুমদার,প্রভাষক গোপীনাথ বনিক,প্রভাষক আতিকুল ইসলাম,প্রভাষক ছাদেক মজুমদার,প্রভাষক সৈয়দ আহম্মেদ,প্রভাষক খলিলুর রহমান,প্রভাষক নিতাই চন্দ্র বিশ্বাস,প্রভাষক মোশাররফ হোসেন,প্রভাষক লুৎফর রহমান,নিহত তামান্নার মামা হারুনুর রশীদ,ফুফু রুনা আক্তার প্রমুখ।
ব্যক্তারা কলেজ ছাত্রী তামান্না হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে ফাঁসি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান।
তামান্নার আক্তারের মামা হারুনুর রশীদ,ফুফু রুনা আক্তারের সাথে কথা হলে তারা জানান,মেয়ে বিয়ে দেওয়ার পর থেকেই তার স্বামী ও শশুর শাশুরি শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তামান্না আক্তারকে গত মঙ্গলবার মেরে পাখার সাথে উড়না দিয়ে ঝুলিয়ে রেখেছে। তারা আরো জানান,ঘাতক স্বামী হাবিবুল্লাহর (আমির হোসেন) বিদেশের কাগজপত্র ও পার্সপোট শশুর বাড়িতে ছিল কিন্তু ঘটনার দিন ভোরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসে। এতে বুঝা যায় পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তামান্না আক্তারকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে তদন্তপূর্বক সঠিক বিচার চাই।
সহপাঠি মেহেদি হাসান শুভ জানায়,তামান্না আক্তার দোল্লাই নোয়াবপুর সরকারি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিল।সে খুবই মেধাবী ও ভদ্র ছিল।তার এই পরিকল্পিত হত্যার পেছনে দোষীদের আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচারেরর দাবি জানাচ্ছি এবং হত্যাকান্ডে জড়িত দোষীদের ফাঁসি রায় আশা করছি।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অংশ নেয় দোল্লাই নোয়াবপুর সরকারি কলেজের শিক্ষক শাহ আলম,আহসান হাবিব,নারগিস সুলতানা,ইসরাত জাহান,শাহালম মুন্সী,জামাল আহাম্মেদ মোল্লা,আজিম উদ্দিন,নিহত তামান্নার চাচা ফারুক হোসেন,চাচা নুরুল ইসলাম,চাচা নজরুল ইসলাম,চাচা নোমান গাজী,প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী,অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষ।
এদিকে বুড়িচং থানার ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, ঘটনার সাথে জড়িত স্বামী, শ্বশুরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারের অভিযান চলছে।
উল্লেখ্য,গত ২২ অক্টোবর দুপুরে বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের ইছাপুরা গ্রাম এলাকায় স্বামীর বাড়িতে সন্তান নেওয়াকে কেন্দ্র করে কলেজ ছাত্রী তামান্নাকে পিটিয়ে হত্যা করে স্বামী হাবিবুল্লাহসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। পরে তার লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যা বলে এলাকায় প্রচারনা চালায় তারা। এ ঘটনায় পরের দিন নিহতের বাবা রওশন ইকবাল ভুঁইয়া রতন বাদী হয়ে বুড়িচং থানায় ৩ জনের নাম উল্লেখ করে আরো ৪ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামী করা হয় নিহতের স্বামী হাবিবুল্লা(আমির হোসেন), শ্বশুর অহিদুর রহমান ও শাশুড়ীসহ ৭জনকে।